আমাদের মন্দিরের ইতিহাস

মৌবাড়ীয়া দুর্গা মন্দির ঈশ্বরদীর একটি ঐতিহ্যবাহী প্রচীন মন্দির। মন্দিরটি স্থাপিত হয়েছিন বাংলা ১৩২৪ সনে। কিন্তু এ মন্দিরে পুজা হতো আরো অনেক আগের থেকে।


প্রতিবছর অত্যন্ত নিয়ম-নিষ্ঠাআচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেবী পুর্গা মায়ের পুজা অর্চনা করা হয়। গতবার (২০১৬ সালে) মন্দিরটির শতবর্ষ পুরন হয়েছে।

শতবছর তো হলো কিন্তু এ মন্দিরের পূজা কি ভাবে শুরু হলো ! বা কে শুরু করলো ! তা কারো সঠিক ভাবে জানা নেই। কিন্তু কিছু কথা অনেকের জানা।। যা মন্দিরটি ইতিহাস।।

মন্দিরের বয়স শতবর্ষ হলেও এই জায়গায় পূজা হয় অারো অনেক আগের থেকে। মানুষের মুখে শোনা যায় অনেক আগে ইসলাম ধর্মের এক ব্যক্তি এই জায়গায় প্রথম পূজা শুরু করেন। তার নাম ছিল "কলিম মণ্ডল"।

তার অনেক জমিজমা ছিল অনেক ধনাড্য মানুষ ছিলেন তিনি কিন্তু একসময় ভাগ্য বদলে যায় তার। কালো ছায়া নেমে আসে তার জীবনে। সকল জমি -জমা ও টাকা- পয়সা,ধন-সম্পদ হারিয়ে সে নিঃস্ব হয়ে যায় । শুধু মাত্র তার বাড়িসহ জমি পরে থাকে কিন্তু সেই জমিও অন্যায় ভাবে দখল করে নেওয়ার চক্রান্ত করে তার শত্রুরা। সেই জমি নিয়ে মামলা চলতে থাকে পাবনা আদালতে।
যদিও জমিটা কলিম মণ্ডলের কিন্তু তার শত্রু তা দখল করে নেবে তা সে জানতো কারণ তার শত্রু প্রচুর অর্থ খরচ করেছে মামলা জেতার জন্য। যেইদিন মামলার রায় সেই দিন কলিম মণ্ডল আদালতে না গিয়ে (বর্তমানে যেই জায়গায় মন্দির) সেই জায়গায় হতাশ ভাবে বসে থাকে তার কারন সে জানে যে সে এই মামলায় হেরে যাবে। 

আর যেই জায়গায় সে বসে ছিল সেটাই ছিল তার জমি যা সে হারাতে চলেছে। এমন সময় সে ঐ জায়গায় একটা কাঠের কাঠাম দেখতে পায় যা জলে ভেসে এসেছে আর তার সাথে মাটি লেগেছিল তা দেখে সে বুঝতে পারে এটা দেবী দূর্গার কাঠাম। 


যা পূজা শেষে সদ্য জলে ভাষানো হয়েছে। তখন কলিম মণ্ডল মনে মনে দেবী দূর্গাকে উদ্দেশ্য করে বলে " সবাই তো তোমার এতো পূজা করেসবাই তোমাকে এতো ডাকেতুমিও সবার আশা পূরণ করো আজ আমার একটা আশা পূরণ করো আমাকে মামলায় জিতিয়ে দাও তাহলে আমার এই জায়গায় অামি তোমার পূজা করবো সামনের বছর।"

এই সব ভেবে সে আদালতে যায়। যখন সে পাবনা আদালতের মেইন গেটের কাছে তখনই সে খবর পায় যে সে তার হারতে বসা মামলা জিতে গেছে।

যা কখনো হওয়ার না। তখনই সে তার জমিতে ফিরে এসে সেই জমির চারদিকে ঘিরে দেয় ও সেই জমিতে মন্দির করার কথা বলে।

পরের বছর সে ঐ জায়গায় পূজা করেন। মন্দিরে যে বিশেষ কাঠামে পূজা হয় তা কলিম মণ্ডলকে মা দৈবিক ভাবে দেখান আর তিনিও সেইভাবে ২২ টি মূর্তি তৈরি করে পূজা করেন। যা এখনো প্রতিবছর হয়ে আসছে ।।

আর মায়ের পূজা করার পর কলিম মণ্ডল হারিয়ে যাওয়া সকল কিছু ফিরে পায়। আর এইভাবে এই জায়গায় শুরু হয় দুর্গা মায়ের পূজা অর্চনা ।।

আর ১৪২৩ বাংলা এবছর মন্দিরের শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হবে ।
মা দুর্গা মৌবাড়ীয়া দুর্গা মন্দির, ২০১৫।
মা দুর্গা মৌবাড়ীয়া দুর্গা মন্দির, ২০১৬।
মা দুর্গা ।
মা দুর্গা ।
মা দুর্গা ।